ক্রীড়া প্রতিবেদক:

প্রথম উইকেটে ৬৬ রানের বেশ ভালো একটা জুটি গড়ে ফেলেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিছুতেই কিছু হচ্ছিল না। ম্যাচ শুরু হওয়ার দেড় ঘন্টা পর সেই জুটিটি ভাঙেন তাইজুল ইসলাম। এরপর ক্যারিবীয়রা উইকেট হারিয়েছে নিয়মিত বিরতিতে।

তবে পঞ্চম উইকেটে আরেকটি জুটি দাঁড়িয়ে যাচ্ছিল। ১১৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর ক্যারিবীয়রা এই উইকেটে যোগ করে ৬২ রান। শেষতক জার্মেই ব্ল্যাকউড আর এমক্রোমাহ বোনারের জুটিটিও ভেঙেছেন সেই তাইজুল।

বাঁহাতি স্পিনারের এক ডেলিভারি বুঝতে না পেরে ফিরতি ক্যাচ দেন ব্ল্যাকউড। ক্যারিবীয় ব্যাটসম্যানের ৭৭ বলে ২৮ রানের টেস্ট মেজাজের ইনিংসটি থেমেছে তাতেই।

প্রথম সেশনে আত্মবিশ্বাসের ঝিলিক দেখা গেছে ক্রেইগ ব্রাথওয়েট, জন ক্যাম্পবেলদের ব্যাটে। সঙ্গে ছিল আবু জায়েদ রাহি, মেহেদি হাসান মিরাজ, তাইজুল ইসলামদের আলগা বোলিংও। কিন্তু বিরতির পর আর প্রথম সেশনের ভুল করেননি স্বাগতিক বোলাররা। বিশেষ করে একাদশের একমাত্র বিশেষজ্ঞ পেসার রাহির নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে বাংলাদেশ।

ব্রাথওয়েট ও ক্যাম্পবেলের ব্যাটে ভর করে প্রথম সেশনের ২৯ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে ৮৪ রান করেছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় সেশনে তারা আরও ২৯ ওভার ব্যাটিং করে স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছে ৬২ রান, বিপরীতে হারিয়েছে ৩টি উইকেট। যার দুইটিই রাহির শিকার। অন্য উইকেট দখল করেন খণ্ডকালীন মিডিয়াম পেসার সৌম্য সরকার।

মধ্যাহ্ন বিরতির আগে দ্বিতীয় স্পেলে ফিরে এক ওভার করেছিলেন রাহি। পরে দ্বিতীয় সেশনেও তাকে দিয়ে বোলিং শুরু করেন অধিনায়ক মুমিনুল। প্রথম সেশনে খানিক টেনে শর্ট লেন্থে বোলিং করছিলেন রাহি। দ্বিতীয় সেশনে আরেকটু সামনের দিকে বল ফেলতে থাকেন তিনি। যার ফলে থেমে আসে রানের চাকা। এর সুফল পেতে সময় লাগেনি।

রানের গতি বাড়াতে গিয়ে রাহির করা অফস্ট্যাম্পের অনেক বাইরের ডেলিভারিতে ড্রাইভ খেলতে চান শেন মোজলি। ব্যাটের নিচের দিকে লেগে বল চলে যায় স্ট্যাম্পে, বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরতে হয় ৩৮ বলে ৭ রান করা মোজলিকে। উইকেটে আসেন আগের ম্যাচে ক্যারিবীয়দের জয়ের পার্শ্বনায়ক এনক্রোমাহ বোনার। দ্বিতীয় স্পেলে পাঁচ ওভারে ৫ রান খরচায় ১ উইকেট নিয়ে থামেন রাহি।

ইনিংসের ৩৮তম ওভারে রাহির বদলে সৌম্যর হাতে বল তুলে দেন মুমিনুল। তার এই সিদ্ধান্তও কাজে লেগে যায় শতভাগ। নিজের তৃতীয় ওভারে সৌম্য ফেরান দুর্দান্ত ব্যাট করতে থাকা ক্যারিবীয় অধিনায়ক ব্রাথওয়েটকে। অফস্ট্যাম্পের বাইরের বলে কাট করতে গিয়ে স্লিপে দাঁড়ানো নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে ক্যাচ দেন ব্রাথওয়েট। ফেরার আগে তিনি ১২২ বল খেলে ৪৭ রান করেন তিনি।

দলীয় ১০৪ রানে তৃতীয় উইকেটের পতনে ফের জুটি বাঁধেন চট্টগ্রামে ইতিহাস গড়ার দুই নায়ক কাইল মায়ার্স ও বোনার। তবে এবার জমেনি তাদের রসায়ন। বলা ভালো, জমতে দেননি আবু জায়েদ রাহি। আজ মায়ার্স-বোনার জুটি টিকেছে ৪০ বল, ইনিংসের ৪৮তম ওভারে তৃতীয় স্পেলে বল হাতে নিয়েই মায়ার্সকে আউট করে দেন টাইগারদের ডানহাতি পেসার। ওয়াইড স্লিপে দাঁড়িয়ে দারুণ ক্যাচ নিয়ে ৫ রানেই মায়ার্সের বিদায় নিশ্চিত করেন সৌম্য।